- শরীর মধ্যস্থ প্লীহা যন্ত্রটি সাড়ে চার থেকে পাঁচ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা এবং দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি পর্যন্ত চওড়া হয়। প্রতিবার প্লীহার পেশির একটু করে সংকোচন ও প্রসারণের ফলে প্লীহার মধ্যে রক্ত সঞ্চালন এর কাজ চলতে থাকে। ধমনী থেকে বেরিয়ে আসা একটি শাখা, ধমনীর মধ্যে টাটকা রক্ত নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে দূষিত রক্ত বের করে নিয়ে আসে একটা শাখা, শিরা দিয়ে এই রক্ত পোর্টাল ভেন দিয়ে যকৃতে গিয়ে প্রবেশ করে। প্লীহা বৃদ্ধি হলে রোগী ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যেতে থাকে। প্লীহার সঙ্গে সঙ্গে লিভার বা যকৃৎ ও বাড়তে থাকে। অন্য রোগের ফলশ্রুতিতেই এই রোগ হয়।
-: বিশেষ বিশেষ কারণ :-
- আগেই বলেছি কিছু কিছু রোগের ফলশ্রুতিতে মানুষের শরীরে প্লীহা বৃদ্ধি ঘটে। উদাহরণ ম্যালেরিয়া জ্বর, কালা জ্বর, টাইফয়েড জ্বর ইত্যাদি। এমনকি হৃদয়ঘটিত কোন অসুখের পরিণাম স্বরূপও প্লীহার বৃদ্ধি ঘটতে পারে। মহিলাদের মেনোপজ বা মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পরও প্লীহা বৃদ্ধি ঘটতে পারে। এছাড়া অন্য কিছু কারণে বিহার বৃদ্ধি ঘটতে পারে। যেমন ব্ল্যাক ওয়াটার ফিফার, লিউকিমিয়া, লিভার সিরোসিস, সপ্লীনিক অ্যানিমিয়া, ট্রপিক্যাল সপ্লীনোমেগালি ইত্যাদি।
- প্লীহা বৃদ্ধি হলে বাইরে থেকে হাত দিলে প্লীহার উপস্থিতি বোঝা যায় অর্থাৎ হাতে ঠেকে। প্লীহা বৃদ্ধি হলে রোগীর পেট একটু বড় হয়ে যায়। মলের রং একটু কালচে মত দেখায়। প্লীহার বৃদ্ধি হলে রোগী দিনে দিনে দুর্বল হয়ে যেতে থাকে। রোগীর শরীর ভেঙে পড়তে থাকে। কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে প্লীহা ও যকৃতের দুটোই একসঙ্গে বাড়ে। ফলে পেটের সমস্যা শুরু হয়ে যায়, যার প্রভাবে গিয়ে পড়ে শরীরের উপর।
প্লীহা বৃদ্ধি হলে মানুষের শরীরে যে সমস্ত লক্ষণ দেখা যায় তা এক কথায় নিম্নরূপ
- 1 প্লীহা বৃদ্ধি হলে দুই থেকে দশ আঙ্গুল পর্যন্ত অনুভব করা যায়।
- 2 অনেক সময় ডায়রিয়া হতে দেখা যায়।
- 3 রোগী ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।
- 4 ক্ষুধা কমে যায়, অরুচি অগ্নিমান্দ্য ইত্যাদি দেখা যায়।
- 5 রোগীর রক্ত আমাশয় হতে পারে।
- 6 অনেক সময় পেট ফাঁপা হতে পারে।
- 7 রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
- 8 দাঁতের গোড়া ফুলে রক্ত পড়ে।
- 9 রোগী হাঁসতে হাঁসতে পেটের বাঁদিকে ব্যাথা হতে পারে।
- 10 কখনো প্লীহা এত বড় হয় যে পেট ভারী ভারী অনুভূত হয়। পরিনাম স্বরূপ প্লীহা বেশি বেড়ে পেটের ভেতর অন্যান্য অঙ্গে চাপ সৃষ্টি করে। অনেক সময় অতিরিক্ত রক্তশূন্যতা হয় এবং তার জন্য রোগী দুর্বল হয়ে অবশেষে কর্মহীন হয়ে পড়ে। ঠিক সময়মতো চিকিৎসা না হলে, রোগী শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam links in message